ডেস্ক রিপোর্টঃ
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্তে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করেছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। প্রথম ধাপে ৩১ জনের শুনানির ধার্য তারিখ আজ। কুমিল্লা সার্কিট হাউজে সকাল ১০টা থেকে এ শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পাঠানো চিঠিতে সংশ্লিষ্টদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। শুনানিতে মাঠ প্রশাসন, অভিযোগকারী মুক্তিযোদ্ধা, স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি ও অভিযোগ ওঠা ব্যক্তি/স্ত্রী-সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধকালীন ঘটনাপ্রবাহ ও তথ্যপ্রমাণসহ অংশগ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনাতর অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পান ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক। দায়িত্ব নেওয়ার পর এক সপ্তাহের মাথায় মুক্তিযোদ্ধা সনদ ও তালিকা যাচাই-বাছাইয়ে নির্দেশ দেন তিনি। তার নির্দেশনার পর দেশের জেলা, উপজেলা থেকে মন্ত্রণালয়ে এবং জামুকায় হাজার হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ে। জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়ে এসব অভিযোগ যাচাই-বাছাইয়ে নির্দেশনা দেয় মন্ত্রণালয়। এরই অংশ হিসাবে আজ কুমিল্লা অঞ্চলের বিভিন্ন জেলার ৩১ জনের বিরুদ্ধে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে জামুকার মহাপরিচালক শাহিনা খাতুন যুগান্তরকে বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধা ভুয়া নাকি আসল, তা ঢাকায় বসে যাচাই করা সম্ভব না। এজন্য আমরা অভিযোগ ওঠা মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য যাচাইয়ে মাঠ পর্যায়ে যাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। এর অংশ হিসাবে আজ কুমিল্লায় যাচ্ছি। সেখানে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনে সে সময়কার সাক্ষ্যপ্রমাণ, তথ্যপ্রমাণ নিখুঁতভাবে নিরূপণের চেষ্টা করব।
জামুকা সদস্য খ. ম. আমীর আলী জার্নালকে বলেন,সব সরকার এসে শুধু মুক্তিযোদ্ধা সনদ দিয়ে গেছে। কে আসল, কে ভুয়া, তা তোয়াক্কা করেনি। আমরা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান অক্ষুণ্ন রাখতে ভুয়াদের শনাক্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরই অংশ আগামীকালের (আজ) শুনানি। আশা করি, এর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ডেটাবেজ তৈরি হবে।’
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সারা দেশে ৯০ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আছে। এসব ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা চিহ্নিত করে একটি ডেটাবেজ তৈরির চিন্তা আছে মন্ত্রণালয়ের। তবে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) মতে, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা লাখেরও বেশি। ১৯৯৪ সালে বিএনপির আমলে করা তালিকায় ৮৬ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে মূল ভিত্তি ধরে সামনে এগোতে চায় অধিদপ্তরটি। বর্তমানে দেশের সনদধারী মোট মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ৮ হাজার। সে হিসাবে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দাঁড়ায় ১ লাখ ২২ হাজার।